প্রাচীন আলেমদের কাছে আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমান।


 

✅ বিষয়ঃ প্রাচীন আলেমদের কাছে আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমান।

✍লিখেছেনঃ এম ডি আলী।


🐵 নাস্তিকতা হলো আল্লাহর অস্তিত্বকে অস্বীকার করা। এটা অসুস্থ চিন্তাধারা,ত্রুটিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি অথবা সত্য উপেক্ষা কিংবা নিছক অহংকারের কারনেই হতে পারে। বেশির ভাগ নাস্তিকদের বুদ্ধিতে ফাটল আছে কারন এরা বিশুদ্ধ যুক্তি দিয়ে কোনো কিছু চিন্তা করার ক্ষমতা রাখে না।সে সব নাস্তিকদের সাধুবাদ জানাই যারা নাস্তিক্যধর্মের ভ্রান্ত বিশ্বাস ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহন করেছেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত সত্যের পক্ষেই ছিলেন। এ ধরনের সত্য গ্রহণকারী মানুষদের জন্যই আমার লেখা।


👉 প্রচুরসংখ্যক সভ্য মানুষরা নাস্তিক্যধর্ম ত্যাগ করে ইসলামকেই বেছে নিচ্ছে তাদের জীবন বিধান হিসেবেঃ


https://www.google.com/amp/s/www.pewresearch.org/fact-tank/2017/04/06/why-muslims-are-the-worlds-fastest-growing-religious-group/%3famp=1


🎙লেখাটি নাস্তিকদের জন্য নয়, এই কারনেই যে নাস্তিক্যধর্মের বিশ্বাস হলো এ পৃথিবীর কোনো মহৎ উদ্দেশ্য নেই কারন এটি শুন্য থেকে অলৌকিক ভাবে নিজে নিজেই এসেছে। একজন মানুষ দুনিয়াতে যতো কিছুই করুক না কেন সবই অর্থহীন। দেশপ্রেম অর্থহীন, মায়ের মমতা অর্থহীন, সন্তানের প্রতি পিতামাতার ভালবাসা অর্থহীন, মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু সবই অর্থহীন । হ্যাঁ, জানি অনেক নাস্তিকই এটা অস্বীকার করতে পারে তাই আমি সরাসরি তাদের লেখা বই থেকেই প্রমান দিয়ে দিচ্ছি।


🌵নাস্তিকদের কাছে অন্যতম বিখ্যাত একজন নাস্তিক হলো হুমায়ুন আজাদ । 


🆓 তার "আমার অবিশ্বাস" নামক কেতাবের ১৭ পৃষ্ঠায় পরিষ্কার করে বর্ণনা করেছেনঃ তবে সব কিছুই নিরর্থক, জগত পরিপূর্ণ নিরর্থকতায়, রবীন্দ্রনাথ নিরর্থক , আইনস্টাইন নিরর্থক, ওই গোলাপও নিরর্থক, ভোরের শিশিরও নিরর্থক, তরুণীর চুম্বনও নিরর্থক, দীর্ঘ সুখকর সংগমও নিরর্থক, রাষ্ট্রপতি নিরর্থক, কেননা সব কিছুরই পরিনতি বিনাশ। 


🆓 "আমার অবিশ্বাস" ১৮ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করা হয়েছেঃ  এই যে আমি বেঁচে আছি, বেঁচে থেকে সুখ পাচ্ছি । আমি মরে যাবো, এই হাস্যকর নিরর্থকতাকে কিভাবে অর্থপূর্ণ করে তুলতে পারি ? আমার জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলার কখন পূর্বনির্ধারিত উপায় নেই । কোন পবিত্র বা অপবিত্র বই বা কোন মহাপুরুষ বা প্রবর্তক আমাকে পথ দেখাতে পারেন না । তাঁরা খুঁজেছেন নিজেদের পথ , নিজেদের জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করার পথঃ আমি তাদের পথে চলতে পারি না । আমি খুজতে চাই আমার পথ । নিজের জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করার দায়িত্ব সম্পূর্ণরুপে আমার নিজের ।


🆓 "আমার অবিশ্বাস" ১৯ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করা হয়েছেঃ আমরা এই নিরর্থক পুনরাবৃত্তি থেকে একটুও এগোইনি , কামু বলেছেন আমাদের জীবন একই রোববারের পর সোমবার, সোমবারের পর মঙ্গলবার, মঙ্গলবারের পর বুধবার, একই নিরর্থক পুনরাবৃত্তি । এই নিরর্থকতার মুখোমুখি কিভাবে দাড়াতে পারি ? কামুর মতে একটিই সত্যিকার দার্শনিক সমস্যা রয়েছে তা হচ্ছে আত্মহত্যা । জীবন কি যাপন করার উপযুক্ত ? বেঁচে থাকার কি কোন মানে হয় ? কোন অর্থ কি আছে নিরুদ্দেশ যাত্রা লেখার বা মহাকাশে নভোযান পাঠানোর বা নারীর নগ্ন স্তন চুম্বনের বা জন্মদানের? ...................মানুষের প্রশ্নের শেষ নেই , হাজার হাজার প্রশ্ন তার , সেগুলোর কোন উত্তর নেই । মানুষ চায় সমাধান , কিন্তু সমাধান চাইতে গিয়েই মানুষ জাগিয়ে তোলে নিরর্থকতা । মানুষ যখন জীবনের অর্থ খুজতে চায় , বুঝতে চায় জীবনের অর্থ কি , তখন সে মুখোমুখি হয় নিরর্থকতার । জীবনের কোন অর্থ নেই । কোন মহৎ উদ্দেশ্য নেই । সুধীন্দ্রনাথ যেমন বলেছেন তার সার কথা পিশাচের উপজীব্য হওয়া।


👉 শুধু কি তাই এই হুমায়ুন আজাদের মতো আরও অনেক  বড় বড় বিখ্যাত নাস্তিক ঘোষণা দিয়েছেন যেমনঃ


✅ ড রাফান আহমেদ তার "অবিশ্বাসী কাঠগড়ায়" ১৭৯ পৃষ্ঠায় "Michael Ruse, God is Dead, Long Live Morality, The Gurdian.15 Mar.2010" সূত্রে বর্ণনা করেছেনঃ নাস্তিক বিবর্তনবাদী গবেষক মাইকেল রুজ স্বীকার করেছেন নৈতিকতা হল স্রেফ ইলুশন বা বিভ্রম, অর্থহীন বাজে ব্যাপার , স্রষ্টার অনুপস্থিতিতে কারও ভাল হতে চাওয়ার কোন ভিত্তি নেই । 


✅ বেস্ট সেলার বই "Sapience: A Bief History Of Humankind: part 1" এ নাস্তিক ইউভাল নোয়াহ হারেরি বলেছেনঃ মহাবিশ্বে কোন দেবদেবী নেই, জাতি বলতে কিছুই নাই, নাই কোন অর্থকড়ি-টাকাপয়সা, মানবাধিকার বলে কিছুই নাই আর নাই কোন আইন ও সুবিচার । এগুলো কেবল সমষ্টিগত কল্পনা ছাড়া কিছুই নয় । 


✅ ড রাফান আহমেদ তার "অবিশ্বাসী কাঠগড়ায়" ১৭৯,১৮০ পৃষ্ঠায় "In an interview with Stone Phillips, Dateline NBC (29 November 1994)" সূত্রে বর্ণনা করেছেনঃ নাস্তিক সিরিয়াল কিলার জেফরি ডাহমারের নিজের অবস্থানের পক্ষে বলেছিলেন যে, যদি কোন মানুষ এটা মনে না করে যে, স্রষ্টার নিকট তাকে জবাবদিহি করতে হবে , তা হলে গ্রহনযোগ্য সীমায় রাখার জন্য নিজের আচরণকে পরিবর্তন করার দরকারটা কি ? আমি এমনটাই ভেবেছিলাম । আমি সবসময় বিবর্তন তত্ত্বকে সত্য বলে বিশ্বাস করেছি । বিশ্বাস করেছি আমরা সবাই স্রেফ থকথকে কাদা থেকে এসেছি, যখন আমরা মরে যাব, ব্যাস শেষ । এরপরে আর কিছুই নাই । 


✅ "Richard Dawkins, River out of Eden: A Darwinian view of life page: 133 (Basic Books 1995)" সূত্রে জানা যায় নাস্তিকগুরু রিচার্ড ডকিন্সের ভাষায় ইলেকট্রন , স্বার্থপর জিন, উদ্দেশ্যহীন বস্তুগত বল ও জেনেটিক প্রতিলিপনের জগতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে । কেউ বা সৌভাগ্যবান হবে আর আপনি এর পিছনে কোন ছন্দ বা কারন খুঁজে পাবেন না আর নাই পাবেন কোন ন্যায়বিচার । যে বৈশিষ্ট আমরা আশা করি (ডারউইনিয় জীবনদর্শনে) ঠিক তাই রয়েছে আমাদের চারপাশে এই জগতে যদি এর মূলে না থাকে কোন পরিকল্পনা , কোন উদ্দেশ্য , কোন মন্দ , কোন ভাল , কিছুই নয় , কেবলই নির্দয় নির্লিপ্ততা । - ড রাফান আহমেদ তার "অবিশ্বাসী কাঠগড়ায়" ১৮০ পৃষ্ঠায় উপরের নাস্তিক পীরের ফতোয়ার পক্ষে একটি সুন্দর উদাহরণ দিয়েছেন । ধরুন পাশাপাশি একজন জীবিত মানুষ ও একটি কাকতাড়ুয়া দাড়িয়ে আছে । একজন নাস্তিক এসে পিস্তল দিয়ে আগে কাকতাড়ুয়া ও পরে মানুষটির মাথা উড়িয়ে দিল । এতে কি সে অন্যায় করল ? বস্তুবাদী চিন্তাধারা অনুযায়ী পরম ন্যায়-অন্যায় বলে কিছুই নেই । কাকতাড়ুয়া মূলত ইলেকট্রন প্রোটন দিয়ে তৈরি । বস্তুবাদী চিন্তা অনুযায়ী সবই এলোমেলো , উদ্দেশ্যহীন , জাগতিক মৃত প্রক্রিয়ার ফল । সুতরাং এই মানদণ্ডে কাকতাড়ুয়া বা মানুষ দুইজনেই একই প্লাটফর্মে দাড়িয়ে আছে । 


✅ ড রাফান আহমেদ তার "অবিশ্বাসী কাঠগড়ায়"  ১৮৪ , ১৮৫ পৃষ্ঠায় "Jean paul Sartre, Nausea: Page 162" সূত্রে উল্লেখ করেছেনঃ সাহিত্যে নোবেলজয়ী Existentialist দার্শনিক "জিন জ্যা পল সাত্রে" রচিত উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র এন্টোনি রোকুয়েন্টিক এর ভাষায় বললে "কথা কিন্তু সত্য । আমি এমনটিই বুঝতে পেরেছি যে আমার বেঁচে থাকার কোনই অধিকার নেই । বস্তুবাদ অনুযায়ী আমার অস্তিত্ব ঘটেছে আকস্মিকভাবে । আমি মানুষ না হয়ে পাথর গাছ কিংবা জীবাণু হিসেবে অস্তিত্ব লাভ করতে পারতাম । আমি চিন্তা করেছিলাম এই যে আমি এই পৃথিবীতে খানাপিনা করে বেড়াচ্ছি আমাদের মূল্যবান অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য কিন্তু এ বেঁচে থাকার তো কোন কারনই নেই , একদম না"।


⛳অনেক অন্ধবিশ্বাসী নাস্তিক তাদের নৈতিকতার ভিত্তির অসারতা বুঝতে পেরে শেষে সাফাই দিতে গিয়ে গোঁজামিল হিসেবে বলেন "নৈতিকতা হল সেটা যা আমার কাজের জন্য অন্য কারো যেন ক্ষতি না হয়।


✅কিন্তু এই বিষয়ে সর্বপ্রথম জন স্টুয়ার্ট মিল সেকুলার লিবারেল সমাজের নৈতিকতার ভিত্তি কি হবে সে বিষয় "On Liberty, Page 23-24" গ্রন্থে বলেন অন্যের ক্ষতি না হলে একজন মানুষ যাই করুক না কেন, সে কাজ মন্দ বলে অভিহিত করা যাবে না এবং সেজন্য তাকে সাজাও দেয়া যাবে না -এ সকল কাজের ক্ষেত্রে সেই মানুষ সার্বভৌম । 


🤔আরেকটি প্রশ্ন, আমার কাজের জন্য অন্য কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাতে আমার কি আসে যায়, যেখানে আমার উন্নতি হচ্ছে? নাস্তিক্যধর্মের আলোকে এটার উত্তর কি হবে?


🍰 পাঠক বুঝতে পেরেছেন তো,নাস্তিক্যধর্ম আপনাকে কতটা হতাশার গর্তে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিচ্ছে। যখন অনলাইনের সস্তা নাস্তিকদের প্রশ্ন করা হয় বড় বড় নাস্তিকরা তো স্বীকার করেছে নাস্তিকতায় সত্য মিথ্যা বলে কিছুই নেই তবে আপনি কেন এখন আমাকে ইসলাম তাগের কথা বলছেন ? আপনি কেন আমাকে নাস্তিক্যধর্ম গ্রহন করাতে চাচ্ছেন ? কেননা আপনি যে দাবি করেছেন নাস্তিকতা সত্যের পথ, এই দাবি তো অর্থহীন , মরে গেলেই সব শেষ তাহলে সত্য অথবা মিথ্যা জেনে আমাদের লাভ কি নাস্তিক্যধর্মের আলোকে? তখন নাস্তিকরা সঠিক যুক্তি দিয়ে উত্তর প্রদান করতে না পেরে হয়তো বলবে আমার প্রশ্ন ভুল অথবা বলবে আমি নাস্তিকতাই নাকি বুঝি না ! 


😁 অথচ এরাই আমাদেরকে কবিতা শোনায়ঃ বরং বিক্ষত হও প্রশ্নের পাথরে। বরং বুদ্ধির নখে শান দাও, প্রতিবাদ করো। অন্তত আর যাই করো, সমস্ত কথায় অনায়াসে সম্মতি দিও না। কেননা, সমস্ত কথা যারা অনায়াসে মেনে নেয়,তারা আর কিছুই করে না, তারা আত্মবিনাশের পথ পরিস্কার করে।


😉 বুঝতে পেরেছেন কেন শুরুতে বলেছিলাম আমার আজকের লেখাটি নাস্তিক্যধর্মে অন্ধ বিশ্বাসীদের জন্য নয় ? কারন আমি যতোই সত্য, শক্তিশালী যুক্তি আর প্রমান পেশ করি না কেন নাস্তিকরা বিশ্বাস করতেই চাইবে না কারণ নাস্তিক্যধর্মে সত্য মিথ্যা বলে কোন কিছুর অস্তিত্বকেই বিশ্বাস করা হয় না। 


🌹 প্রাচীন আলেমরা অনেক যুক্তিবাদী এবং চিন্তাশীল মানুষ ছিলেন । তারা নাস্তিকদের মত সব কিছুকেই অর্থহীন বলে বিশ্বাস করতেন না । তারা আমাদেরকে আল্লাহর অস্তিত্বের অনেক অনেক শক্তিশালী যুক্তি দিয়েছিলেন আর তা আজ পর্যন্ত কেউই খণ্ডন করতে পারেনি। আমি আপনাদেরকে সেই প্রমান গুলোই আজকে দেখাবো। তবে শর্ত হচ্ছে লেখাটি শুধু আপনি পড়লেই হবে না সবাইকেই পড়তে উৎসাহিত করতে হবে। ছড়িয়ে দিতে হবে সত্যের আলো। আর হ্যাঁ ! আমার জন্য নামাজে দুয়া করতেও ভুলবেন না।


✅ ইমাম রাযী (রহ) প্রভুতি মনিষীগণ আল্লাহর অস্তিত্বের (সুরা বাকারা ২:২১) এই আয়াত দ্বারা প্রমান গ্রহন করেছেন এবং প্রকৃত পক্ষেও এই আয়াতটি আল্লাহর অস্তিত্বের উপর খুব বড় দলিল। আকাশ ও পৃথিবীর বিভিন্ন আকার, বিভিন্ন রং, বিভিন্ন স্বভাব এবং বিভিন্ন উপকারের প্রাণীসমূহ, ওদের সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব, তাঁর ব্যাপক ক্ষমতা ও নৈপুণ্য এবং তাঁর বিরাট সাম্রাজ্যের সাক্ষ্য বহন করছে ।


✅ কোন একজন বেদুঈনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলঃ আল্লাহ যে আছে তাঁর প্রমান কি ? সে উত্তরে বলেছিলঃ সুবহানাল্লাহ! উটের বিষ্ঠা দেখে উট আছে এর প্রমান পাওয়া যায়, পায়ের চিহ্ন দেখে পথিকের পথ চলার প্রমান পাওয়া যায়,তাহলে এই যে বড় বড় নক্ষত্র বিশিষ্ট আকাশ, বহু বহু বিশিষ্ট যমীন, বড় বড় ঢেউ বিশিষ্ট সমুদ্র কি সেই মহাজ্ঞানী ও সুক্ষ্মদর্শী আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমান দেয় না ?


✅ খলীফা হারুনুর রশীদ হযরত ইমাম মালিককে প্রশ্ন করেছিলেনঃ আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমান কি ? তিনি বলেছিলেনঃ ভাষা পৃথক হওয়া, শব্দ আলাদা হওয়া, স্বর মাধুর্য পৃথক হওয়া আল্লাহ আছেন বলে সাব্যস্ত করছে। 


✅ হযরত ইমাম আবু হানিফা (রহ) কেও প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ আমাকে ছেড়ে দেও, আমি এখন অন্য চিন্তায় আছি। জনগন আমাকে বলেছে যে একখানা বড় নৌকা আছে যার মধ্যে বিভিন্ন ব্যবসার মাল রয়েছে, ওর না আছে কোন রক্ষক বা না আছে কোন চালক। এটা সত্ত্বেও ওটা বরাবর নদীতে যাতায়াত করছে এবং বড় বড় ঢেউগুলো নিজে নিজেই চিরে ফেড়ে চলে যাচ্ছে। থামবার জাগায় থামছে, চলবার জাগায় চলছে, ওতে কোনো মাঝিও নেই। কোনো নিয়ন্ত্রকও নেই। তখন প্রশ্নকারীরা বললোঃ আপনি কি বাজে চিন্তায় পড়ে আছেন ? কোনো জ্ঞানী এ কথা বলতে পারে যে এত বড় নৌকা শৃঙ্খলার সাথে তরঙ্গময় নদীতে আসছে যাচ্ছে অথচ ওর কোনো চালক নাই ? তিনি বললেনঃ আফসস তোমাদের জ্ঞানে! একটি নৌকা চালক ছাড়া শৃঙ্খলার সাথে চলতে পারে না, কিন্তু এই সারা দুনিয়া, আসমান ও যমীনের সমুদয় জিনিস ঠিকভাবে আপন আপন কাজে লেগে রয়েছে অথচ ওর কোনো মালিক, পরিচালক এবং সৃষ্টিকর্তা নেই ? উত্তর শুনে তারা হতভম্ব হয়ে গেল এবং সত্য জেনে নিয়ে মুসলমান হয়ে গেল । 


🤔 চিন্তা করতে পারেন ! ইমাম আবু হানিফা (রহ) এর কাছে উপস্থিত সব নাস্তিকরা তাদের নাস্তিক্যধর্ম ত্যাগ করে সবাই লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ পাঠ করে একমাত্র সত্য জীবন বিধান ইসলাম গ্রহন করে মুসলিম হয়ে গিয়েছিল। মাশাআল্লাহ ।


✅ হযরত ইমাম শাফেই (রহ) কে আল্লাহর অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তরে বলেনঃ উত গাছের একই পাতা একই স্বাদ। ওকে পোকা, মৌমাছি, গরু ছাগল, হরিণ ইত্যাদি সবাই খেয়ে থাকে ও চরে থাকে । এটা খেয়েই পোকা হতে রেশম বের হয়, মৌমাছি মধু দেয়, হরিণের মধ্যে মৃগনাভি জন্মলাভ করে এবং গরু ছাগল গোবর ও লাদি দেয় । এটা কি ঐ কথার স্পষ্ট দলীল নয় যে, একই পাতার মধ্যে বিভিন্ন প্রকৃতির সৃষ্টিকারী একজন আছেন তাকেই আমরা আল্লাহ মেনে থাকি, তিনিই আবিস্কারক এবং তিনিই শিল্পী । 


✅ হযরত ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহ) এর নিকট আল্লাহর অস্তিত্বর দলীল চাওয়া হলে তিনি বলেনঃ জেনে রেখো! এখানে একটি মজবুত দুর্গ রয়েছে । তাতে কোন দরজা নেই, পথ নেই এমনকি ছিদ্র পর্যন্ত নেই। বাহিরটা চাদির মত চকচক করছে এবং ভিতরটা সোনার মত জ্বল জ্বল করছে, আর উপর নীচ, ডান বাম চারদিকে সম্পূর্ণ রুপে বন্ধ রয়েছে। বাতাস পর্যন্ত ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না । হটাত ওর একটি প্রাচীর ভেঙে পড়লো এবং ওর ভিতর হতে চক্ষু কর্ণ বিশিষ্ট, চলৎ শক্তি সম্পন্ন সুন্দর আকৃতি অধিকারী একটি জীবন্ত প্রাণী বেরিয়ে আসলো। আচ্ছা বলতো  এই রুদ্ধ ও নিরাপদ ঘরে এ প্রাণীটির সৃষ্টিকারী কেউ আছে কি নেই ? সেই স্রস্টার অস্তিত্ব মানবীয় অস্তিত্ব হতে উচ্চতর এবং তাঁর ক্ষমতা অসীম কি না ? তার উদ্দেশ্য ছিল এই যে ডিমকে দেখো, ওর চারদিকে বন্ধ রয়েছে তথাপি মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ ওর ভিতর জীবন্ত মুরগীর বাচ্চা সৃষ্টি করেছেন । এটাই আল্লাহর অস্তিত্ব ও তাঁর একত্ববাদের প্রমান । 


✅ হযরত আবু নুয়াস (রহ) আল্লাহর অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জবাব দেনঃ আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষিত হওয়া ও তা হতে বৃক্ষরাজি সৃষ্টি হওয়া এবং তরতাজা শাখার উপর সুস্বাদু ফলের অবস্থান আল্লাহর অস্তিত্ব এবং তাঁর একত্ববাদের দলীল হওয়ার জন্য যথেষ্ট । 

ইবনে মুআয (রহ) বলেনঃ আফসোস ! আল্লাহ তা"আলার অবাধ্যতা এবং তাঁর সত্ত্বাকে অবিশ্বাস করার উপর। মানুষ কি করে সাহসিকতা দেখাচ্ছে অথচ প্রত্যেক জিনিসই সেই বিশ্ব প্রতিপালকের অস্তিত্ব এবং তাঁর অংশীবিহীন হওয়ার উপর সাক্ষ্য প্রদান করছে ।


🔰সুত্রঃ উল্লেখিত বর্ণনা সমূহ ডঃ মুজিবুর রহমান অনুবাদকৃত, তাফসীরে ইবনে কাসীর, ১৯১ থেকে ১৯৩ পৃষ্ঠা থেকে নেয়া হয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post