স্রস্টার অসীমতার মধ্যে শুন্যতা কোথায় ছিল?

 


🎞বিষয়ঃস্রস্টার অসীমতার মধ্যে শুন্যতা কোথায় ছিল?
✍লিখেছেনঃএমডি আলী।
✅উত্তরঃস্রস্টার অস্তিত্বকে বাতিল প্রমান করতে না পেরে নাস্তিকান্ধরা নতুন নতুন কুযুক্তি বা গোঁজামিল বিবর্তনের জাদুতে পেয়ে আমার কাছে পেশ করে।আমার মতো মুমিনরা যখন নাকানিচুবানি দেয় ওদের কুযুক্তিকে তখন গালি আর ঠাট্টা করে চলে যায়। চলুন আজকে একটি গোঁজামিলকে ধুয়ে দিয়ে আসি।
⛔নাস্তিকান্ধদের ভ্রান্ত দাবী ও প্রশ্নঃ
সৃষ্টি শব্দের অর্থ অনস্তিত্বশীল কোনকিছুকে অস্তিত্বে আনা। প্রকৃতিতে কোন কিছুর উপাদান গুলো আগেই বিদ্ধমান থাকলে তাকে আর সৃষ্টি বলা যায় না,তৈরি বা বানানা বা রূপান্তর বলা যায়।তাহলে মহাবিশ্ব ও সকল কিছু সৃষ্টির পূর্বে অসীম আল্লাহ পাক ছাড়া আর কিছুই তো ছিল না। সেই অসীমতার (আল্লাহর) মধ্যে শুন্যতা কোথায় ছিল? অসীম (আল্লাহ) আর শুন্যতা একই সাথে অবস্থান করতে পারে না কারন একটি অপরটির অস্তিত্ব ভুল প্রমান করে।
🕵নাস্তিকান্ধদের নাকানিচুবানি দেয়া উত্তরঃ
যখন মহাবিশ্ব ছিল না তখন শুধুই আল্লাহ ছিলেন। আল্লাহ স্বয়ং অস্তিত্বহীনতা থেকে শুন্যতাকে বানাতে পারেন এবং এই শুন্যতা বানাতে হলে আগে থেকেই শূন্যতার একটা ডেমো বা মোডেল আল্লাহর দেখতে হবে এটা জরুরি না। আল্লাহ এসবকে সহজ ভাবেই বানাতে পারেন।এটা আল্লাহর কাছে কঠিন কিছুই না একেবারেই সহজ।
এভাবেও যদি বলি তাও সমস্যা নেই শুন্যতা আগে থেকে ছিল না আল্লাহ শুন্যতা বানিয়েছেন এবং সেখান থেকে মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। এখন আপনি যদি আল্লাহর অস্তিত্ব স্বীকার করেন এই সাধারন বিষয় বুঝতে পারা কি একেবারেই কঠিন নাকি পানির মতো সহজ?
অসীম (আল্লাহ) আর শুন্যতা একই সাথে ছিল এটা কে বলেছে? কুরআন সুন্নাহের কোথায় আছে আল্লাহ আর শুন্যতা একই সাথে ছিল? এরকম কোন তথ্য আমি তো পাইনি, আপনারা কোথা থেকে পাইলেন? প্রমান দিয়েন,কেমন?
প্রকৃতিতে কোন কিছুর উপাদান গুলো আগেই বিদ্ধমান থাকলে তাকে আর সৃষ্টি বলা যায় না,তৈরি বা বানানা বা রূপান্তর বলা যায়- নাস্তিকরা এই তথ্য কোথায় পেল যে আল্লাহ মহাবিশ্ব সৃষ্টি করার আগেই প্রকৃতি সেখানে উপস্থিত ছিল?এমন দাবী কুরআন সুন্নাহের কোথায় আছে? যদি না থাকে এমন দাবী করা কি সঠিক হয়েছে নাস্তিকান্ধদের?
আর অসীম (আল্লাহ) আর শুন্যতা একই সাথে অবস্থান করতে পারে না কারন একটি অপরটির অস্তিত্ব ভুল প্রমান করে? - আল্লাহর কাছে শূন্যতাও একটি সৃষ্টি। এবং এই শূন্যতাকে বানাতে হলে আল্লাহর "শূন্যতার" সাথে একই অবস্থানে থাকতে হবে না। আল্লাহ শূন্যতার সাথে একই অবস্থানে না থেকেও শূন্যতাকে বানানোর ক্ষমতা রাখেন।এই সহজ কথা ডারুউইন দাদার চেলারা বুঝেনা কেন?
তারপরেও যুক্তির খাতিরে যদি ধরেও নেই যে অসীম আল্লাহ আর শুন্যতা একই সাথে আছে বা অবস্থান করতে পারে তাও সমস্যা হবে না কারন স্রষ্টা নিজেই যেখানে শুন্যতা সৃষ্টি করেছেন এবং স্রষ্টা অবশ্যই শুন্যতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন এবং এই নিয়ন্ত্রণের ফলে স্রস্টার অস্তিত্ব অথবা স্রস্টার ক্ষমতার প্রতি বিন্দুমাত্র প্রভাব পরবে না। কারন শূন্যতাও আল্লাহর সৃষ্টি যাকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে আনা হয়েছে।

>>>মহাবিশ্ব অসীম হলে স্রস্টার অস্তিত্ব কি বাতিল হবে?

উত্তরঃ যদি বলেন মহাবিশ্বের স্বাধীনতা আছে,ইচ্ছা শক্তি আছে,শুরুও নাই আবার শেষও নাই তাহলে মহাবিশ্ব স্বয়ং বাকি সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা হয়ে যাচ্ছে না? কারন সৃষ্টিকর্তা তো সেই যা সব কিছুকেই সৃষ্টি করবেন। শুধু কি তাই?সৃষ্টিকর্তার শুরু নাই,শেষ নেই এবং উনি সর্বশক্তিশালী,উনার স্বাধীনতা আছে,স্বয়ং ইচ্ছা শক্তি আছে একই কিছু যদি মহাবিশ্বের থাকে তাহলে মহাবিশ্বই নাস্তিকদের সৃষ্টিকর্তা হয়ে যাবে না? এই সমস্যার সমাধান কি?

মহাবিশ্ব অসীম হলে সৃষ্টিকর্তার প্রয়োজন নেই – প্রশ্ন হচ্ছে “প্রয়োজনের অস্তিত্ব” কাকে বলে? মহাবিশ্ব কি স্বয়ং সম্পূর্ণ? মহাবিশ্ব কি প্রয়োজনের মুখাপেক্ষী? মহাবিশ্ব অসীম হলে স্রস্টার প্রয়োজন নেই তাহলে মহাবিশ্বের অসীমতা থেকে বাকি সব কিছু আসার প্রয়োজন হয়েছে কেন?

যদি আপনি বলেন মহাবিশ্বের শক্তি আছে,স্বাধীনতা আছে,শুরু নাই আবার শেষও নেই তাহলে আমরা আস্তিকরা আমাদের ভাষায় এমন মহাবিশ্বকে সৃষ্টিকর্তা বলবো কারন মহাবিশ্বের অসীমতা ধারনা যদি সেটাই হয় তাহলে আমাদের আস্তিকদের সেটা মানতে সমস্যা নেই।
কিন্তু মহাবিশ্ব যদি অসীম হয় আর মহাবিশ্বের যদি স্বাধীন ইচ্ছা,সর্বশক্তিমান না হয় তাহলে আমাদের যৌক্তিক আপত্তি আছে,থাকবে।

আচ্ছা যুক্তির খাতিরে ধরে নিলাম স্রষ্টা নেই। এখন সম্পূর্ণ স্রস্টাকে এরিয়ে গিয়ে আসুন মহাবিশ্বের অসীমতার ধারনাকে ব্যাখ্যা করি দেখি এটা যৌক্তিক কিনা।

যদি এটা হয় মহাবিশ্ব অসীম অর্থাৎ এর শুরুও নাই আবার শেষ ও নাই,স্বাধীনতা নেই,নিজের ইচ্ছা শক্তি নেই তাহলে আমাদের অস্তিত্বই আসতো না। আমাদের সব অস্তিত্ব যেখানে বুদ্ধিমান সত্ত্বার দিকে ইশারা দেয় সেখানে মহাবিশ্ব যেহেতু যদি সম্পূর্ণ শুন্যতাময় অসীম তাই এখান থেকে বাকি কিছু অস্তিত্বে আসতেই পারে না।মহাবিশ্বের যদি ইচ্ছা শক্তি না থাকে,স্বাধীন না তাহলে তাহলে তো অসীম থেকে অসীম হওয়ারই কথা অসীম থেকে সসীম হলো কোন উদ্দেশ্যে কেন?

এটা কিভাবে?

মহাবিশ্ব কি নিজে স্বয়ং শক্তিশালী? যদি উত্তর হয় না ।
মহাবিশ্বের কি স্বয়ং স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি আছে? যদি উত্তর হয় না।
মহাবিশ্বের কি স্বয়ং পারফেক্ট বুদ্ধিমত্তা আছে? যদি উত্তর হয় না।

তাহলে সাধারন প্রশ্ন জাগে

মহাবিশ্বের যদি স্বাধীনতা না থাকে,ইচ্ছা না থাকে,বুদ্ধি না থাকে তাহলে কিভাবে সেই অসীম থেকে সকল কিছু সৃষ্টি হতে পারে? তাহলে মুল কথা তো সেই একই হয়ে যাচ্ছে যে শুন্যনামক মহাবিশ্ব থেকে বাকি সব অস্তিত্বে এসেছে?

মহাবিশ্ব অসীম এর পিছনে যৌক্তিকতা কি? প্রমান কি ? অসীমতার (স্রষ্টার অস্তিত্ব বাদ দিয়ে) শুন্যতা থেকেই বাকি সকল সৃষ্টির অস্তিত্ব কিভাবে এসেছে?

অসীম ০+ অসীম ০ = ১ হবে না। গানিতিক যুক্তিতেও বুঝা যাচ্ছে মহাবিশ্ব অসীম হলে অন্য সকল কিছুই সেখান থেকে আসতে পারতো না।আর এসব যৌক্তিকতা থেকে সিদ্ধান্তে আসা যায় মহাবিশ্ব নিজে আসলে অসীম না।

🤔এখন আমার প্রশ্ন যা নাস্তিক্যধর্ম দিয়ে সমাধান দেয়া উচিত নাস্তিকান্ধদেরঃ
👉১/নাস্তিকদের কথা অনুযায়ী মহাবিশ্ব স্রষ্টা থেকে নয় বরং শুন্য থেকে এমনে এমনেই এসেছে।তাহলে শূন্যতার ঠিক কোন জাগায় মহাবিশ্বের অস্তিত্ব ছিল? এবং সেখান থেকে কিভাবে এমনে এমনেই বের হয়েছে?
👉২/শুন্যতা অর্থ যদি হয় যেখানে "কিছুই ছিল না" তাহলে সেখান এমন কি ঘটেছে বা কি এমন কিছু ছিল কি না, যার সাহায্যে মহাবিশ্ব এমনে এমনেই এসেছে? কিসের মাধ্যমে?সেই মাধ্যম কি ?
👉৩/শুন্যতা আর মহাবিশ্ব কি একই সাথে অবস্থান করতে পারে?যদি মহাবিশ্ব শূন্যতার মধ্যে পূর্ব থেকে অস্তিত্বে থাকে তাহলে সেটা কিভাবে আর বিস্ফোরণের ফলেই কেন মহাবিশ্বকে আসতে হবে?আর যদি অস্তিত্বে না থাকে তাহলে এসেছে কেন?
👉৪/মহাবিশ্ব শুন্যতা থেকে আসার প্রয়োজন হয়েছে কেন?প্রয়োজনের অস্তিত্ব কি আগে থেকেই ছিল নাকি শুন্যতা সেই প্রয়োজন সৃষ্টি করেছে?কিভাবে করেছে? শুন্যতা থেকে মহাবিশ্ব সৃষ্টির প্রয়োজন কেন হয়েছে?
👉৫/শুন্যতা আর মহাবিশ্ব যদি অসীম হয় তাহলে এরা একই অবস্থাকে থাকে কিভাবে? যদি শুন্যতা অসীম না হয় তাহলে এটা কেন ও কিভাবে হয়েছে? আর যদি মহাবিশ্ব অসীম হয় তাহলে সেটা কেন? এই অসীমকে, মহাবিশ্ব বানিয়েছে কে? যদি শূন্যতা আর মহাবিশ্ব সসীম হয় তাহলে অসীম থেকে কিভাবে এলো?
👉৬/মহাবিশ্ব এবং সকল কিছু যদি শুন্যতা থেকে আসে তাহলে মহাবিশ্ব যদি শুন্য থেকে আসে তাহলে সকল কিছু কেন শুন্যতা থেকে আসতে পারে না?যেমন আম গাছে এমনে এমনেই কেন কাঁঠাল ধরে না? সন্তান কেন বাবা মা ছাড়া শুন্য থেকে এমনে এমনেই হতে পারে না?কোনো খাবার না খেয়েই এমনে এমনেই কেন ক্ষুধা দূর হয় না?মুমিনরা এমনে এমনেই কেন সব দুনিয়ায় থেকে চলে যায় না?নাস্তিকান্ধরা অন্য প্রশ্ন দেখে কান্না করলেও এই প্রশ্নে খুব খুশি?
👉৭/যুক্তির খাতিরে যদি ধরেও নেই অসীম আর শুন্যতা একই সাথে অবস্থান করতে পারে না কারন একটি অপরটির অস্তিত্ব ভুল প্রমান করে-প্রশ্ন হচ্ছে অসীম আর শুন্যতা এক সাথে থাকতে পারে না এই তথ্যের ভিত্তি কি নাস্তিক্যধর্মের কাছে? কার কথা বিলিভ করে এই কথা হয়েছে?নাস্তিদকের কাছে অসীমের অস্তিত্ব আছে? শূন্যতার অস্তিত্বের প্রমান কি?
👉৮/নাস্তিকরা স্রস্টার অস্তিত্বের যেই প্রমান চায় সেই প্রমান দিয়ে স্বয়ং অসীম আর শূন্যতার অস্তিত্বকে প্রমান করতে পারবে নাস্তিকরা?সেই প্রমান কিভাবে যৌক্তিক সন্দেহের বাইরে থাকবে?
👉৯/স্রষ্টা আছে এটা নাকি মুমিনরা ধরে নেয় তাহলে একই যুক্তিতে স্রষ্টা ছাড়াই মহাবিশ্ব নিজে নিজেই এসেছে এটা নাস্তিকান্ধদের ধরে নিতে হবে কেন?
👉১০/ "স্রষ্টা নেই" এই তথ্য ছাড়া মহাবিশ্বের অস্তিত্বকে ব্যাখ্যা কিভাবে করা সম্ভব? স্রষ্টা নেই এই তথ্য কি যৌক্তিক সন্দেহের বাইরে?
👉১১/নাস্তিকান্ধরা অনেক সময় বলে থাকে "স্রষ্টা নেই" এটা যদি প্রমান নাও হয় এরমানে কি এটা প্রমান হয় যে স্রষ্টা আছে? - একই প্রশ্নের ভিত্তিতে এই প্রশ্ন অটোম্যাটিক চলে আসে যে যদি মুমিনরা "স্রস্টার অস্তিত্ব আছে" এর পক্ষে প্রমান নাও দিতে (হাজার হাজার প্রমান দেয়া হয়েছে) পারে তাহলে কিভাবে এটা কিসের ভিত্তিতে প্রমান আছে যে স্রস্টার অস্তিত্ব নেই?নাস্তিক্যধর্ম কি সমাধান দিবে?
👉১২/মহাবিশ্ব যখন শূন্যতা থেকে আসছিল তখন কি সেখানে সত্য উপস্থিত ছিল নাকি মিথ্যা?সত্যি বা মিথ্যা যাই আসুক না কেন, কিন্তু মহাবিশ্ব আসার পরেই কেন আসতে হয়েছে?

Post a Comment

Previous Post Next Post